আল-আমীন চৌধুরী, বিশেষ প্রতিনিধি: গতকাল ৯ জানুয়ারি ২০২৫ পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীদের অনাস্থা এবং বাজারের ধীরগতির কারণ সম্পর্কে জানতে বিভিন্ন অংশীজনদের সঙ্গে মতবিনিময় করার জন্য ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ কর্তৃক একটি বিশেষ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন ।
পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের ১৬ বছরের শাসনামলে বাংলাদেশের অর্থনীতির যে শাখাটি সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সেটি হল দেশের পুঁজিবাজার।
আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর পুঁজিবাজারে একটু পরিবর্তনের হাওয়া লাগলেও তা ধরে রাখতে পারিনি অন্তর্ভুক্তি সরকারের নতুন কমিশন।
বিনিয়োগকারীদের স্বপ্ন ভেঙ্গে চুরমার হয়ে যায় দুমাস না যেতেই। পুঁজিবাজারে নেমে আসে ভয়াবহ দর পতন, বিনিয়োগকারা হারাতে থাকে তাদের পুঁজি, অনেকেই হয়েছেন সর্বস্বান্ত।
বিগত অগাস্ট থেকে সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত পুঁজিবাজারের সূচক কিছুটা উর্ধ্বমুখী হলেও
অক্টোবর মাসের ভয়াবহ দর পতনের ফলে অনেক বিনিয়োগকারী নতুন করে আবারও তাদের পুঁজি হারিয়ে পথে বসেছেন। বিনিয়োগকারীদের মনে তৈরি হয় নতুন করে পুঁজি হারানোর আতঙ্ক ভয়।
বিগত নভেম্বর থেকে ভয়াবহ সূচক পতনকে কিছুটা থামানো গেলেও পুঁজিবাজারের দৈনিক লেনদেনের মাত্রা ব্যাপকভাবে কমতে থাকে এবং সেটি 300 কোটি টাকার মধ্যে ঘোরাফেরা করতে থাকে। বিনিয়োগকারীদের আস্তা ফিরিয়ে আনার জন্য নিয়ন্ত্রণ সংস্থাগুলো নানা ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করলেও আতঙ্ক যেন কাটছেই না।
দীর্ঘদিনের রুগ্ন পুঁজিবাজারের উন্নয়নে করনী কিরুগ্ন পুঁজিবাজারের উন্নয়নে করনী কি হতে পারে ? কিভাবে বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরিয়ে আনা যায়?
সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের চেয়ারম্যান মমিনুল ইসলাম, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের চেয়ারম্যান এ কে এম হাবিবুর রহমান, ডিবিএ এর প্রেসিডেন্ট সাইফুল ইসলাম, ডিএসই পরিচালক মেজর জেনারেল কামরুল ইসলাম ( অব), মোঃ শাকিল রিজভী, মোঃ শাহজাহান, রিচার্ড ডি রোজারিও, মিনহাজ মান্নান ইমন, বিএম বিএ প্রেসিডেন্ট মাজেদা খাতুন এবং ডিএসই ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাত্ত্বিক আহমেদ শাহ উপস্থিত ছিলেন।
ডিএসসি চেয়ারম্যান, জনাব মমিনুল ইসলাম, পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রণ সংস্থাগুলোকে ঢেলে সাজানোর উপর গুরুত্ব আরোপ করেন এবং তিনি নিয়ন্ত্রণ সংস্থাগুলোর সংস্কারের দাবি জানান ।
এর প্রেক্ষিতে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন সংস্কার একটি ক্রমবর্ধমান প্রক্রিয়া এটি কোন সুনির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে শেষ করা যাবে না, কিন্তু এটি খুব শুরু করা প্রয়োজন।
তবে তিনি প্রত্যাশা করেন আগামী ফেব্রুয়ারীর মধ্যে প্রাথমিক সংস্কারগুলো কত দিনের মধ্যে করা যাবে সে সম্পর্কে একটি ধারণা দিতে পারেন।
মতবিনিময় সভায় পুঁজিবাজারে লিস্টেট প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে এবং নতুন কোম্পানি লিস্টেড করার প্রক্রিয়া সম্পর্কে ও আলোচনা করা হয়।
মতবিনিময় সভায় নিয়ন্ত্রণ সংস্থাগুলোতে রাজনীতিক বিবেচনায় যেন কোন ব্যক্তিবর্গ নিযুক্ত না হতে পারে সেই বিষয়েও দাবী তোলা করা হয় । তাছাড়াও পুঁজিবাজারে নতুন কোম্পানি তালিকাভুক্তির ক্ষেত্রে যেন রাজনীতিক বিবেচনাকে প্রাধান্য না দেওয়ার দাবি তোলা হয়।
পুঁজিবাজার এর নতুন প্রতিষ্ঠান তালিকাভুক্তি করার ক্ষেত্রে মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোর সহযোগিতা যেন নেওয়া হয় সেই ক্ষেত্রেও দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়।
ডিএসসি চেয়ারম্যান মনে করেন তার নেতৃত্বে একটি দক্ষ,সৎ নিষ্ঠাবান কমিটি গঠন করতে পেরেছেন।
উক্ত কমিটি এই রুগ্ন পুঁজিবাজারের উন্নয়নের দক্ষতা ও নিষ্ঠার সহিত কাজ করে যাবেন এবং খুব শীঘ্রই ভাল কিছু দেখাতে পারেন।
তিনি বিনিয়োগকারীদের গুজবে কান না দিয়ে তালিকাভুক্ত কোম্পানির বর্তমান বিভিন্ন সূচক গুলো পর্যালোচনা করে এই বিনিয়োগ করার পরামর্শ প্রদান করেন।
তার জন্য তারা বিভিন্ন অংশী জন এবং গণমাধ্যম কর্মীদের সহযোগিতা প্রত্যাশা করেন।