হংকংয়ে জাতীয় নিরাপত্তা আইন লঙ্ঘনের মামলায় ৪৭ জনের বিচার শুরু

নিজস্ব প্রতিবেদক : সোমবার , ০৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৩

হংকংয়ের ‘বিতর্কিত’ জাতীয় নিরাপত্তা আইন লঙ্ঘনের দায়ে গ্রেফতার ৪৭ জনের বিচার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। সোমবার (৬ জানুয়ারি) চীনের বিশেষ প্রশাসনিক প্রদেশটির ওয়েস্ট কাউলুন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এ বিচারকাজ শুরু হয়। এটি হংকংয়ের নিরাপত্তা আইন লঙ্ঘনের ঘটনায় সবচেয়ে বড় মামলা।

মামলার আসামিদের মধ্যে রয়েছেন, হংকংয়ের কয়েকজন বিশিষ্ট গণতন্ত্রপন্থী ব্যক্তিত্ব, যেমন অ্যাক্টিভিস্ট জোশুয়া ওয়াং ও বেনি তাই। ২০২১ সালের মার্চে তাদের বিরুদ্ধে সরকার উৎখাতের চেষ্টা করার অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়। সমালোচকরা বলছেন, এর মাধ্যমে চীনা ভূখণ্ডের সঙ্গে ভিন্নমত পোষণ করলে, তাকে গুরুতর অপরাধ বলে গণ্য করার বিষয়টি প্রতিষ্ঠা পেলো।

জানা যায়, আসামিদের মধ্যে যারা দোষী সাব্যস্ত হবেন, তাদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হতে পারে। তবে তাদের মধ্য থেকে ১৬ জন নির্দোষ বলে প্রমাণিত হতে পারেন। বাকি ৩১ জনকে  আদালত দোষী সাব্যস্ত করেছেন ও বিচার প্রক্রিয়া শেষে তাদের সাজার রায় ঘোষণা করা হবে।

২০২১ সালের মার্চে এ মামলার আসামিদের বিরুদ্ধে আইনসভা নির্বাচনের আগে একটি বেসরকারি প্রাথমিক নির্বাচন অনুষ্ঠানের অভিযোগ ওঠে। বিষয়টিকে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা সরকার ধ্বংসের বা চীন ও হংকংয়ের স্থিতিশীলতা নষ্ট করার চক্রান্ত বলে দাবি করেন।

এদিকে, সমালোচকদের দাবি, জাতীয় নিরাপত্তা আইন ভিন্নমত দমন করার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হয়। তবে চীন ও হংকং কর্তৃপক্ষ মনে করে, বিশৃঙ্খলা ও অপ্রতীকর পরিস্থিতি মোকাবিলায় এ আইনের দরকার ছিল।

সোমবার আসামিদের হাজির করার আগে ওয়েস্ট কাউলুন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বাইরে আসামিপক্ষের অসংখ্য সমর্থকের অবস্থান দেখা যায়। এসময় তারা ‘এ আইন লজ্জাজনক’, ‘অবিলম্বে সব রাজনৈতিক বন্দীদের মুক্তি দিন’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে দেখা যায়।

প্রসিকিউটরদের দাবি, আসামিরা আইনসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার উদ্দেশ্যে প্রার্থী বাছাই করার জন্য একটি প্রাথমিক নির্বাচন করতে গিয়েছিলেন। যা কোনোভাবেই আইনসম্মত নয়। বেইজিং নিযুক্ত প্রধান নির্বাহীকে ক্ষমতাচ্যুত করার লক্ষ্যে আইনসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন ও আইন পাসে বাধা সৃষ্টি করতেই তারা ওই সুসংগঠিত পরিকল্পনা করেছিলেন।

জোশুয়া ওয়াং (২৬) যিনি তার প্রতিবাদী ভূমিকার জন্য তিনবার জেলে গেছেন। হংকং বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন অধ্যাপক বেনি তাই (৫৮), প্রাক্তন সাংবাদিক গুইনেথ হো (২৬), যিনি ২০১৯ সালে ইউয়েন লং শহরের বিক্ষোভ প্রচার করেছিলেন। প্রাক্তন আইন প্রণেতা ক্লডিয়া মো (৬৬), যিনি আট বছর ধরে নির্বাচিত প্রতিনিধি ছিলেন।


আর্কাইভ