জহিরুল হক রাসেল, কুমিল্লা প্রতিনিধিঃ
কুমিল্লার চান্দিনায় একটি অনুষ্ঠানে অংশ নিতে এসে হামলার শিকার হয়েছেন লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) মহাসচিব ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী ড. রেদোয়ান আহমেদ। পরে তিনি গুলি চালালে আহত হয়েছেন স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগের ২ কর্মী মাহমুদুল হাসান সরকার ওরফে জনি এবং নাজমুল হোসেন নাঈম। সোমবার দুপুর আড়াইটার দিকে চান্দিনা উপজেলা সদরে অবস্থিত চান্দিনা রেদোয়ান আহমেদ ডিগ্রি কলেজের ক্যাম্পাস-২ এর পাশে এ ঘটনা ঘটে। গুলির পর তিনি (ড. রেদেয়ান) নিজেই থানায় আশ্রয় নিলেও পরে গুলির ঘটনায় দায়েরকৃত করা মামলায় পুলিশ রেদোয়ান আহমেদ, তার গাড়ি চালকসহ ৪ জনকে গ্রেফতার করে। রাতে ড. রেদেয়ানসহ ৪ জনকে আদালতে হাজির করার পর তাদের জামিন না মঞ্জুর করে কারাগারে পাঠিয়েছে।
দলীয় নেতাকর্মীরা জানান, সোমবার বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে চান্দিনা উপজেলা সদরে অবস্থিত চান্দিনা রেদোয়ান আহমেদ ডিগ্রি কলেজ মিলনায়তনে (কলেজ ক্যাম্পাস-২ মমতাজ আহমেদ ভবনে) ঈদ পূনর্মিলনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করে পৌর এলডিপি। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন দলের মহাসচিব ড. রেদোয়ান আহমেদ। একই সময়ে স্থানীয় ছাত্রলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ একই স্থানে কর্মী সভা করার ঘোষণা দিলে উভয় গ্রুপে উত্তেজনা দেখা দেয়। দুপুর আড়াইটার দিকে ড. রেদোয়ান অনুষ্ঠানে যাওয়ার পথে ওই ক্যাম্পাসের অদূরে ছাত্রলীগ ও স্বেচ্ছাসেক লীগের নেতাকর্মীরা তাঁকে বাঁধা দিয়ে গাড়িতে তরমুজ ও ঢিল মারা শুরু হলে তিনি গাড়ি ঘুরিয়ে সেখান থেকে ফিরে যাওয়ার সময় শটগান থেকে গুলি করেন। পরে থানা গিয়ে তিনি আশ্রয় নেন।
উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সামিরুল খন্দকার রবি জানান, চান্দিনা রেদোয়ান আহমেদ কলেজ ছাত্রলীগ ঈদের পূর্ব থেকে ৯ মে ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠান করতে প্রস্তুতি নেন। এরই মধ্যে পৌর এলডিপিও একই দিন ঈদ পুনর্মিলনীর আয়োজন করে। সোমবার দুপুর থেকে ছাত্রলীগের আয়োজনে যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতা-কর্মীরা অনুষ্ঠানস্থলে আসতে থাকে। দুপুর আড়াইটায় দিকে রেদোয়ান আহমেদ গাড়ি নিয়ে ওই ক্যাম্পাসের সামনে এসে গাড়ি থেকে কয়েক রাউন্ড গুলি করে দ্রুত স্থান ত্যাগ করে থানায় গিয়ে আশ্রয় নেন।
ড. রেদোয়ান আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘ কলেজের ২য় ক্যাম্পাসে এলডিপি আয়োজিত অনুষ্ঠানে আমাকে প্রধান অতিথি করা হয়। অপর দিকে কলেজের প্রধান ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগকে অনুষ্ঠান করার অনুমতি দেওয়া হয়। এলডিপি সংঘাত এড়াতে কলেজ ক্যাম্পাস-২ মমতাজ আহমেদ ভবনে পূর্বনির্ধারিত অনুষ্ঠানের আয়োজন করলে সেখানেও তারা (ছাত্রলীগ) গিয়ে ইচ্ছে করেই সংঘাত সৃষ্টি করে। দুপুরে আমি ক্যাম্পাস-২ এর দিকে যেতে চাইলে ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতাকর্মীরা রাস্তায় বাঁধা দিয়ে তরমুজ ও ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে আমার গাড়িতে হামলা চালায়। তখন আমি আত্মরক্ষার্থে আমার লাইসেন্স করা শর্টগান দিয়ে গুলি চালাই।
কুমিল্লার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এম. তানভীর আহমেদ জানান, এ ঘটনায় রেদোয়ান আহমেদসহ ১৫ জনকে এজাহারনামীয় ও ২০-২৫ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে থানায় মামলা হয়েছে। এ মামলায় ড. রেদোয়ান আহমেদসহ ৪ জনকে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করার পর বিচারক তাদের জামিন না মঞ্জুর করে কারাগারে প্রেরণ করেছেন।