ঈদুল ফিতরের ১৯৬তম জামাতের জন্য প্রস্তুত শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দান

নিজস্ব প্রতিবেদক : বৃহস্পতিবার , ২০ এপ্রিল ২০২৩

শোলাকিয়া-জাতীয় ঈদগাহসহ সারা দেশে বাড়তি নিরাপত্তা

কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ঈদগাহ মাঠ প্রায় দুইশ বছরের পুরোনো। প্রতি বছর কয়েক লাখ মুসল্লি একসঙ্গে এ ময়দানে ঈদের নামাজ আদায় করেন। ২০১৬ সালে ঈদুল ফিতরের জামাতের আগে ঘটে এক অপ্রীতিকর ঘটনা। প্রবেশপথের নিরাপত্তা চৌকিতে হয় ভয়াবহ জঙ্গি হামলা। এতে দুজন পুলিশ কনস্টেবল, একজন গৃহবধূ ও এক জঙ্গি নিহত হন। আহত হন বেশ কয়েকজন পুলিশ কনস্টেবল ও ধর্মপ্রাণ মুসল্লি। বিষয়টি মাথায় রেখে এবারও নেওয়া হয়েছে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা।

ঈদ সামনে রেখে প্রায় পাঁচ মাস আগে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালত এলাকা থেকে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুই জঙ্গি ছিনিয়ে নেওয়ার বিষয়টি মাথায় রেখেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। জঙ্গিরা সুযোগের অপেক্ষায় থাকে। ঈদুল ফিতরে তারা সেই সুযোগটি নিতে পারে বলে আশঙ্কা উড়িয়ে দিচ্ছেন না তারা।

তবে পুলিশের জঙ্গিবিরোধী ইউনিট কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিট বলছে, দেশে জঙ্গিদের হামলার সক্ষমতা নেই। জঙ্গিদের সব ধরনের সক্ষমতা তলানিতে ঠেকেছে। তবু আসন্ন ঈদুল ফিতর কেন্দ্রে করে সব ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।

বুধবার (১৯ এপ্রিল) ঈদ উপলক্ষে সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বলেন, সারাদেশের ঈদগাহের জন্য ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কিছু কিছু এলাকায় ঈদের জামাত একদিন আগে হয়, সেখানেও নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। ঈদের জামাতে পুলিশের পোশাকে ও সাদা পোশাকে নিরাপত্তা থাকবে। এছাড়া র‌্যাব, ডিবি, এপিবিএন ও কমিউনিটি পুলিশিংসহ সবাইকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

ঈদুল ফিতরের ১৯৬তম জামাতের জন্য প্রস্তুত কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দান। ২০১৬ সালে জঙ্গি হামলার কলঙ্কজনক অধ্যায় সামনে রেখে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা গড়ে তোলার কথা জানিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। শহরের উপকণ্ঠে নরসুন্দা নদীর তীরে প্রায় দুইশ বছরের পুরোনো এ ঐতিহাসিক ঈদগাহ ময়দানে ঈদুল ফিতরের জামাতে দেশ-বিদেশের তিন লাখেরও বেশি ধর্মপ্রাণ মুসল্লি নামাজ আদায় করেন।

ঈদুল ফিতরের জামাতের প্রস্তুতি নিয়ে শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানের নিরাপত্তা সম্পর্কে কিশোরগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ রাসেল শেখ জাগো নিউজকে বলেন, চলতি মাসের ১ তারিখ থেকে শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানের নিরাপত্তা নিয়ে পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়। স্থানীয় বাসিন্দা ও জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে সার্বক্ষণিক সমন্বয় রয়েছে। স্থানীয় হোটেল-মোটেলে অপরিচিত কেউ এসে থাকলে জেলা পুলিশকে জানাতে বলা হয়েছে। মুসল্লিরা যখন ঈদের নামাজ পড়তে ঈদগাহে আসবেন তখন প্রত্যেকের চেকপোস্টের মাধ্যমে মেটাল ডিটেক্টরের সাহায্যে সার্চ করে ভেতরে ঢোকানো হবে। এছাড়া যখন মুসল্লিরা মাঠে প্রবেশ করবেন তখন আর্চওয়ে গেটের মাধ্যমে প্রবেশ করবেন।


আর্কাইভ