বিজয়নগর, সংবাদদাতা : ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলার বিভিন্ন স্থানে উঠে গেছে বিটুমিন, তৈরি হয়েছে ছোট-বড় হাজার হাজার গর্ত। কোথাও কোথাও পিচ সরে গিয়ে ঢিবি হয়ে আছে, অনেক জায়গায় সড়ক ডেবে গেছে। এমনকি কিছু জায়গা হয়েছে ঢেউয়ের মতো। চলাচল স্বাভাবিক রাখতে কিছু স্থানে ইট বিছিয়ে সাময়িক সলিউশন নেওয়া হলেও তা কোনোভাবেই স্থায়ী সমাধান নয়। বরং এতে ভয়াবহ অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে।
সড়কের পিচ, ইট, পাথর উঠে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। সামান্য বৃষ্টি হলেই পানি জমে একদম পুকুরের মতো পরিনত হয়। এ সড়ক দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলছে ছোট-বড় বিভিন্ন যানবাহন। এতে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে পরিবহন মালিক, যাত্রী ও দুই উপজেলার লাখো লাখো মানুষ। এই সড়ক সংস্কারের অভাবে হেঁটে চলাচলও কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। সড়কে সৃষ্ট হওয়া গর্তে প্রায়ই আটকে যায় গাড়ি। এতে করে যাত্রীরা যেমন পড়ে বিপাকে তেমনি ভাবে নষ্ট হচ্ছে গাড়ির যন্ত্রাংশ।
বিজয়নগর উপজেলার সঙ্গে আখাউড়া উপজেলার সংযোগের একমাত্র সড়কের দৈর্ঘ্য প্রায় ২৭ কিলোমিটার। এর মধ্যে বিজয়নগর অংশের প্রায় ২২ কিলোমিটার সড়কের বেহালদশা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, আখাউড়া উপজেলার শেষ প্রান্ত থেকে বিজয়নগর উপজেলার শুরু সিঙ্গারবিল বাজারের হতেই
সড়কের পিচ, ইট, পাথর উঠে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। সামান্য বৃষ্টি হলেই পানি জমে থাকে যা চলাচলের জন্য খুব বেকায়দায় পড়তে হয় পথচারীদের। এভাবে চলছে আখাউড়া আজমপুর বাজার পযন্ত।আর আখাউড়া আমোদাবাদ থেকে আমতলী পর্যন্ত সড়কের পুরোটাতেই পিচ উঠে গেছে বললেই চলে, সৃষ্টি হয়েছে বড় বড় গর্তের মতো বিপদজনক গর্ত । সড়কটির বেহালদশার কারণে যাত্রী দুর্ভোগ এখন চরমে। চান্দুরা - আখাউড়া ২৭ কিলোমিটারের এ সড়কে ভাড়া বেড়ে ৮০ টাকার বদলে এখন ১১০ টাকা। ৪৫-৫০ মিনিটের পথ পাড়ি দিতে সময় লাগে দেড় ঘন্টা থেকে প্রায় দুই ঘন্টা।
এই সড়কটি স্থানীয় সরকার ও প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) অধীনে।
সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বলছে, সড়কটি মেরামতে প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। তবে কাজ শুরু হবে।
সুপ্রিয়া বিশ্বাস নামে এক ভদ্র মহিলা বলেন,আমার শশুর বাড়ি চান্দুরা ইউনিয়নে আলাদাদাউদপুর গ্রামে আমি আমার সন্তান নিয়ে চম্পকনগর সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে কিন্ত আসার পথে অনেক অনেক বেকায়দায় পড়তে হয় একমাত্র রাস্তার পরিস্থিতি ভয়াবহ জন্য। আমি খুব কষ্ট করে এ সড়ক দিয়ে এসেছি চিকিৎসা নিতে দেখা গেলো আমার বাচ্চার পাশে আমার চিকিৎসাও নিয়ে যেতো হলো।
আপনাদের লিখনে যেনো আমাদের মতো বহু অসুস্থ রোগীদের এই দুর্দশা পরিণতি থেকে রেহাই পাই।
আখাউড়ায় - চান্দুরা সড়কে সিএনজিচালিত অটোরিকশা চালক মো: জাকির মিয়া(৩৭) বলেন, গাড়ি চালাতে গিয়ে আমরা যেমন কষ্ট করি তেমন যাত্রীদেরও অনেক কষ্ট করতে হয়। আমতলী বাজার থেকে চম্পকনগর বাজার পযন্ত সড়কের অবস্থা খুবই ভয়াবহ অবস্থা যা চলাচলের উপযোগী নয়। বিশেষ করে আমাদের গাড়ির অবস্থা খুব খারাপ হয়ে যা,আগে সারাদিনে ছয় থেকে আটবার যাওয়া-আসা করতাম। এখন দুই-তিনবারের বেশি চলাচল করতে সম্ভব হয় না।আর শারীরিক অসুস্থতা কথা বলবো কি ভাই আমাদের মতো গরীব মানুষের সংসার চালাতে হিমসিম খেতে হয়,এরই মধ্যেই রাস্তার পরিস্থিতি খারাপের জন্য শরীরের অবস্থা খুব খারাপ যায়।
তানজিনা নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, সড়কে এত বড় বড় গর্ত থাকলে তো আর চলা যায় না। আমরা খুব কষ্ট করি এ সড়ক দিয়ে চলতে।
সিএনজিচালিত অটোরিকশা চালক নাছির মিয়া বলেন, গাড়ি চালাতে গিয়ে আমরা যেমন কষ্ট করি যাত্রীদেরও কষ্ট। আগে সারাদিনে পাঁচ থেকে ছয়বার যাওয়া-আসা করতাম। এখন দুই-তিনবারের বেশি সম্ভব হয় না।
বিজয়নগর উপজেলা এলজিইডি এর প্রকৌশলী মুহাম্মদ আশিকুর রহমান ভূইয়া জানান, সড়কটি মেরামতে একটি প্রকল্পের ইস্টিমেট তৈরি করে পাঠানো হয়েছে। সব প্রক্রিয়াধীন প্রায় শেষে দিকে।তাছাড়া তিনি জানান আমরা সর্বোচ্চ ভাবে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি এই সড়কের কাজ দ্রুত শুরু করার জন্য।
বিজয়নগর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা সাধনা এিপুরা বলেন,চান্দুরা - আখাউড়া সড়কের পিচ, ইট, পাথর উঠে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। সামান্য বৃষ্টি হলেই পানি জমে উঠে এরকম বহু অভিযোগ আমাদের কাছে এসেছে।তাছাড়া আমি নিজেও এসড়ক দিয়ে নিয়মিত চলাচল করছি রাস্তায় অবস্থা খুবই খারাপ। আমরা সার্বিকভাবে চেষ্টা করছি এসড়কের কাজ দ্রুত হওয়ার জন্য, এমনকি উপজেলার বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারাও সার্বিকভাবে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে সড়কের কাজটি দ্রুত হওয়ার জন্য।
আমরা আশাবাদী এই সড়কে কাজ অতি শীঘ্রই শুরু হবে।