সারা বাংলা

দীর্ঘদিন আত্মগোপনে থেকে নিজ ভাই ও মেয়েকে দিয়ে প্রতিপক্ষ ও পুলিশের নামে দুটি পৃথক অপহরন মামলা দায়ের, ভিকটিম মিজান সরদার উদ্ধার

শাহীন গোলদার, সাতক্ষীরা প্রতিনিধি  :  পারিবারিক কলহ ও জমিজমা সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে নিজেই দীর্ঘদিন আত্মগোপনে থেকে নিজ ভাই ও মেয়েকে দিয়ে তার প্রতিপক্ষ ও পুলিশের নামে দুটি পৃথক অপহরন মামলা দিয়েও শেষ রক্ষা হলোনা ভিকটিম মিজানুর রহমান সরদারের। বুধবার ভোর রাতে তালা উপজেলার পাটকেলঘাটা থানার দুদলী গ্রামের তার দ্বিতীয় স্ত্রীর বাবার বসত বাড়ী থেকে ভিকটিম মিজানুর রহমান সরদারকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। দুপুরে সাতক্ষীরার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মুকিত হাসান খাঁন সদর থানায় এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। ভিকটিম মোঃ মিজানুর রহমান সরদার (৫৮) শ্যামনগর উপজেলার গাবুরা ইউনিয়নের চকবারা গ্রামের মৃত আব্দুল জব্বার সরদারের পুত্র। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মুকিত হাসান জানান, চলতি বছরের ১০ জানুয়ারী সকাল সাড়ে ৭টার দিকে মিজানুর রহমানকে হত্যার ভয় দেখিয়ে চাঁদা দাবির উদ্দেশ্যে সাতক্ষীরা শহরের মুনজিতপুর লম্বাটালি এলাকা থেকে অপহরন করা হয়েছে মর্মে তার কন্যা শারমীন আক্তার রিমা বাদী হয়ে তার আপন তিন চাচা ও এক চাচীর নামে সাতক্ষীরা থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নং-৪৩, তারিখ ২৬/০২/২৫ ধারা-৩৬৪/৩৪ পেনাল কোড।  উক্ত মামলার তদন্তাকারী কর্মকর্তা এসআই সোহরাব হোসেন মামলাটির তদন্তকালে জানতে পারেন এই মামলার ভিকটিম মিজানুর রহমান সরদারকে অপহরন করে (একই উদ্দেশ্যে) হত্যার ভয় দেখিয়ে চাঁদা দাবির ঘটনা উল্লেখ করে তার আপন ভাই মোঃ মঞ্জুর সরদার বাদী হয়ে ৪ জন পুলিশ সদস্যসহ ২৪ জনের নাম উল্লেখ করে ২০২৪ সালের ২৫ জুলাই বিজ্ঞ আমলী আদালত নং-৫ (শ্যামনগর) এ একটি পিটিশন মামলা দায়ের করেছেন। যার মামলা নং-৮০৯/২৪ ধারা-৩৬৪/৩৮৫/৩৮৭/৩৪ পেনাল কোড। বিজ্ঞ আদালত উক্ত মামলাটি তদন্ত করে পুলিশ প্রতিবেদন দাখিলের জন্য পিবিআই সাতক্ষীরাকে নির্দেশনা প্রদান করেন। যা বর্তমানে তদন্তাধীন রয়েছে। তিনি জানান, সদর থানায় দায়েরকৃত মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই সোহরাব মামলাটির তদন্তভার নেয়ার পর অধিকতর তদন্ত শেষে এ মামলার ভিকটিম মিজান সরদারকে আজ বুধবার ভোর রাতে তালা উপজেলার পাটকেলঘাটা থানার দুদলী গ্রামের তার দ্বিতীয় স্ত্রীর বাবার বসত বাড়ী থেকে উদ্ধার করেন।  একই সাথে একই ভিকটিমকে ভিন্ন সময়ে অপহরন দেখিয়ে ভিকটিম এর ভাই ও মেয়ে ভিন্ন দুটি মামলা দায়েরের বিষয়টিও তিনি উদ্ধার করেন।  তিনি আরো জানান, ভিকটিমকে প্রাথমিক জিজ্ঞসাবাদে জানা যায় পারিবারিক কলহ (প্রথম স্ত্রীর সাথে সম্পর্ক ভালো না থাকা) এবং জমিজমা সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে তিনি নিজেই দীর্ঘদিন চুয়াডাঙ্গায় আত্মগোপনে ছিলেন।  সম্প্রতি তিনি পাটকেলঘাটা থানার দুদলী গ্রামে তার দ্বিতীয় স্ত্রীর কাছে এসেছেন এমন গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আজ ভোর রাতে সেখান থেকে তাকে উদ্ধার করা হয়। বিষয়টি নিয়ে আরো অধিকতর তদন্ত চলমান রয়েছে বলে এই পুলিশ কর্মকর্তা আরো জানান। সংবাদ সম্মেলনে এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুপার (সদর সার্কেল) শাহীনুর চৌধুরী, সদর থানার ওসি শামিনুল হকসহ অন্যান্যরা।

সাতক্ষীরার শ্যামনগরের স্বেচ্ছা সেবকলীগ নেতা সাবের মিস্ত্রীর জবর দখলে থাকা পুকুর থেকে ৩৬টি দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি: সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলা স্বেচ্ছা সেবকলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সাবের মিস্ত্রীর জবর দখলে থাকা বাড়ির পাশের পুকুর থেকে ৩৬টি দেশীয় অস্ত্র (রামদা ও হাসুয়া) উদ্ধার করেছে পুলিশ। রবিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে শ্যামনগর পৌরসদরের সাবের মিস্ত্রির বাড়িসংলগ্ন পুকুর থেকে উক্ত দেশীয় অস্ত্র গুলো উদ্ধার করা হয়। দীর্ঘদিন ধরে পানির মধ্যে থাকার কারনে এসব অস্ত্রে মরিচা পড়েছে।শ্যামনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ হুমায়ুন কবির মোল্যা বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান পুকুরের পানি কমে যাওয়ায় স্থানীয় লোকজন দুপুরে গোসল করতে গিয়ে বস্তার মধ্যে লুকানো অবস্থায় কিছু শক্ত বস্তু তাদের পায়ে লাগে। এরপর তারা বিষয়টি পুলিশকে জানান। একপর্যায়ে ডুবুরী নিয়ে উক্ত পুকুরে তল্লাশীর পর তারা ৩৬ পিস দেশীয় অস্ত্র (রামদা ও হাসুয়া) উদ্ধার করা হয়। কয়েক মাস ধরে প্লাষ্টিকের বস্তায় মোড়ানো অবস্থায় সেগুলো পুকুরে ফেলে রাখা হয় বলে তিনি জানান। এঘটনায় উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে আলোচনা করে পরবর্তী আইনগত পদক্ষেপ নেয়া হবে বলে তিনি আরো জানান।এদিকে, স্থানীয় গ্রামবাসী মাসুদ হোসেনসহ কয়েকজন জানান, স্বেচ্ছা সেবকলীগ নেতা সাবের মিস্ত্রি, তার শ^শুর আওয়ামী বাস্তুহারা লীগের সভাপতি ভুমিহীন নেতা মোকছেদ আলী গাজী ও তার শ্যালক শেখ রাসেল শিশু কিশোর পরিষদের সভাপতি রহমত আলী দীর্ঘদিন ধরে উক্ত পুকুরটি জবরদখল করে রেখেছিল। জুলাই-আগষ্টের ছাত্র-জনতার বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের সময় পরিস্থিতির প্রয়োজনে ব্যবহারের জন্য হয়তো তারা উক্ত অস্ত্রগুলো সংগ্রহ করেছিল। পাঁচ আগষ্টের পট পরিবর্তনের পর থেকে সাবের ও তার শ্যালক রহমত আলী পলাতক রয়েছে বলেও তারা আরো জানান।নকিপুর গ্রামের সুজা মাহমুদ জানান, এই অস্ত্রগুলো বিভিন্ন সময়ে ভুমিহীন নেতা মোকছেদ, তার জামাতা স্বেচ্ছা সেবকলীগ নেতা সাবের মিস্ত্রি ও ছেলে রহমত আলীর নেতৃত্বে ভুমিদস্যু বাহিনীর সদস্যরা ব্যবহার করতেন। উক্ত পুকুটিও তারা দীর্ঘদিন ধরে জবর দখলে রেখেছিলেন।

ছবি